আবুল কালামের স্ত্রী পারভীন আক্তারের “ভাষ্যমতে,, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে থাকা সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন। তবু পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে। এ সময় তাঁর স্বামীকে মারধর করেছে পুলিশ।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সাদা পোশাকে আসামি ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য অবরুদ্ধ ও মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ। অন্যদিকে আসামির পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশ তাঁকে মারধর করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি গাড়োপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে শ্রীপুর থানা থেকে পুলিশ গিয়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারের পাশাপাশি আসামিকে গ্রেপ্তার করে। অবরুদ্ধ থাকা দুই পুলিশ সদস্য হলেন শ্রীপুর থানায় উপপরিদর্শক মো. মামুন ও কনস্টেবল মো. রাজ্জাক। আসামি হলেন গাড়ো পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম (৪৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের এসআই মো. মামুন ও মো. রাজ্জাক সাদা পোশাকে আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিলেন। এ সময় পুলিশ পরোয়ানা না দেখাতে চাইলে তাঁদের গালাগাল করেন আসামি ও তাঁর পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আসামির গায়ে হাত তোলেন পুলিশ সদস্যরা। এতে আসামির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন সাদা পোশাকে থাকা দুই পুলিশ সদস্যকে সন্দেহ করে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে শ্রীপুর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে তাঁদের উদ্ধার করে ও আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।”’
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক কাউন্সিলর মো. জিলাল উদ্দিন বলেন আজ শুক্রবার ‘আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পুলিশ সদস্য ও আবুল কালামকে একটি দোকানে অবরুদ্ধ অবস্থায় দেখেছি। পরে শ্রীপুর থানার বেশ কিছু পুলিশ এসে দোকানের শাটার খুলে তাঁদের বের করেন। আবুল কালামের বিরুদ্ধে গত মার্চ মাসের একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। পুলিশ সেই পরোয়ানা আমাদের দেখিয়েছেন। দোকানের ভেতর থাকা দুই পুলিশ সদস্য সাদা পোশাকে ছিলেন।’”’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী, সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যের সহযোগী হিসেবে পোশাকধারী পুলিশ সেখানে ছিলেন। আবুল কালাম বিভিন্ন মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাঁকে মারধর করা হয়নি। বরং আইনগত দায়িত্ব পালন করতেই সেখানে গিয়েছিল পুলিশ। তাঁকে ধরতে গেলে আসামিপক্ষের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করেন। পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে তাঁরা। এ ঘটনায় পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।”’
এই দিকে আবুল কালামের শ্বশুর আফাজ মণ্ডল আজ দুপুরে বলেন, দুই পুলিশ সদস্য আবুল কালামকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। তাঁরা পুলিশ পরিচয় দিলেও গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল না। আবুল কালামের স্ত্রী পরোয়ানা দেখাতে বললে পুলিশ সদস্যরা তা দেখাতে চাননি। এ সময় আবুল কালাম ও পুলিশের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। আবুল কালামকে মারধর করেন ওই পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে আবুল কালামসহ ওই দুই পুলিশ সদস্য একটি দোকান ঘরের ভেতর প্রবেশ করে শাটার লাগিয়ে দেন। তাঁদের সঙ্গে পোশাকধারী পুলিশ সদস্য ছিলেন কি না, তা জানতে পারেননি।”’