সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১১:২৫ পূর্বাহ্ন

হারপিস জোস্টার কী

হারপিস জোস্টার এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। হারপিস ভাইরাস স্নায়ুকোষে আক্রমণ করে এই রোগ সৃষ্টি করে। হঠাৎ একদিন ত্বকের একটি নির্দিষ্ট অংশে তীব্র জ্বালাপোড়া শুরু হয়। এর পরপরই সেখানে ফুসকুড়ি ওঠে।

কারও জলবসন্ত ভালো হয়ে যাওয়ার অনেক দিন পরেও এর জীবাণু স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থেকে যেতে পারে। পরবর্তীতে কোনো কারণে মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেলে এই জীবাণু সুপ্ত অবস্থা থেকে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং আবারও আক্রমণ করতে পারে। মূলত একে ‘হারপিস জোস্টার’ বলে।

লক্ষণ: হঠাৎ করে ত্বকের এক পার্শ্বে তীব্র জ্বালাপোড়া ও ব্যথা করা। একই স্থানে জলবসন্তের ফুসকুড়ির মতো হয়। এটি সাধারণত শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় হয় এবং ডান অথবা বাম যেকোনো এক পাশে হয়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা: হারপিস জোস্টার নির্ণয়ের জন্য সাধারণত কোনো পরীক্ষা লাগে না। রোগীর ইতিহাস ও ত্বকের ফুসকুড়ি দেখেই হারপিস নিখুঁতভাবে নির্ণয় করা যায়। কিছু ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণ দেখার জন্য ডায়াবেটিসসহ আরও কিছু পরীক্ষা করা যেতে পারে।

চিকিৎসা: জোস্টার চিকিৎসার ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ও ক্রিম খুবই কার্যকর। ব্যথা কমানোর জন্য প্রিগাবালিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের দানা অথবা ফুসকুড়ি চুলকাবেন না। প্রয়োজনে ঠান্ডা সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।

দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা: হারপিস জোস্টারের ফুসকুড়ি চলে যাওয়ার পরেও জ্বালাপোড়া অথবা ব্যথা অনেক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে, একে ‘পোস্ট-হারপেটিক নিউরালজিয়া’ বলে। পোস্ট-হারপেটিক নিউরালজিয়া চিকিৎসায় প্রিগাবালিন অথবা এমিট্রিপটাইলিন জাতীয় ওষুধ দীর্ঘমেয়াদি সেবন করতে হতে পারে। যত দ্রুতই চিকিৎসা শুরু করুন, জোস্টার পুরোপুরি ভালো হতে ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগে। পোস্ট হারপেটিক নিউরালজিয়ার চিকিৎসা আরও দীর্ঘমেয়াদি; ক্ষেত্রবিশেষে ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

ডা. নাজমুল হক মুন্নাসহকারী অধ্যাপক, নিউরোলজি, মুগদা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

বিজ্ঞাপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেইজে

[IT_EPOLL_VOTING id=”2057″][/IT_EPOLL_VOTING]