সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন

সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজে আগুন, আতঙ্কিত যাত্রীরা নিরাপদেই ফিরে এলো।

সময় তখন রাত সোয়া ১২টা। ঘাট থেকে দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে মাঝসমুদ্রে জাহাজ। যাত্রার ক্লান্তিতে কেউ কেউ ঘুমিয়ে পড়েছেন। আবার ভ্রমণের আনন্দে আড্ডা-গল্পে মশগুল অনেকেই। কেউবা ব্যস্ত গভীর রাতের সৌন্দর্য উপভোগে।
এ অবস্থায় হঠাৎ করে ভেসে আসে ‘আগুন, আগুন’ চিৎকার। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জাহাজজুড়ে। সবার মধ্যে ভর করে উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগ।

এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল চট্টগ্রাম থেকে সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ এমভি বে ওয়ানে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে জাহাজের একটি ইঞ্জিনে আগুন লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন জাহাজের কর্মীরা। তবে আতঙ্ক-ভয় আর কমেনি যাত্রীদের।
শেষ পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার পরিবর্তে চট্টগ্রামে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত হয়। আজ শুক্রবার বেলা ১টায় সে জাহাজ নগরের পতেঙ্গায় ওয়াটার বাস টার্মিনালে পৌঁছায়। ঘাটে নামার পর সবার মাঝে স্বস্তি ফেরে। আর শেষ হয় ১৩ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির।

জাহাজে থাকা যাত্রীরা জানায়, আগুন ধরলে জাহাজটি সাগরে নোঙর করে রাখা হয়। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কান্নাকাটি করতে থাকেন। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে চরম আতঙ্কে ছিলেন অভিভাবকেরা।

জাহাজে ছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তিনি বলেন, আগুনের কারণে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছিল। তবে নিরাপদে ফিরতে পেরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন এখন।
পতেঙ্গা ১৫ নম্বর ঘাট থেকে পর্যটক নিয়ে জাহাজটি বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা যাওয়ার পর জাহাজে এই সমস্যা হয়।

জাহাজটিতে থাকা পর্যটক জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাত সোয়া ১২টার দিকে ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বের হয়। ডেকের ওপর থেকে তার পোড়া গন্ধ পাওয়া যায়। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। সমস্যার পর ইঞ্জিন বন্ধ করে জাহাজটি সাগরে নোঙর করা হয়। পরে সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয়।

গত বছর চট্টগ্রাম থেকে সমুদ্রপথে সেন্ট মার্টিনে বিলাসবহুল এই জাহাজটির চলাচল শুরু হয়। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স জাহাজটি পরিচালনা করে আসছে।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের মহাব্যবস্থাপক মো. হাসানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজের ইঞ্জিনে কারিগরি সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে তিন মিনিটের মধ্যে জাহাজে থাকা টেকনিশিয়ানরা তা ঠিক করেন। এরপর জাহাজটির সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার মতো অবস্থা ছিল। কিন্তু যাত্রীরা ভীত ছিল। ফিরে আসতে চেয়েছিল। এ জন্য জাহাজ ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের জামালখানের বাসিন্দা আবদুল গাফফারের এক ছেলে, ছেলের বউ, দুই মেয়ে ও জামাতা, চার নাতি-নাতনি সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে যাচ্ছিলেন এই জাহাজে করে। একই জাহাজে ছিল তাঁর ভাতিজা, ভাতিজা বউ ও তাঁদের সন্তান। তিনি বলেন, সারা রাত টেনশনে ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের চিন্তায় রাতে ঘুম হয়নি। তাঁরা নিরাপদে ফেরায় দুশ্চিন্তা কমেছে।

বিজ্ঞাপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেইজে

[IT_EPOLL_VOTING id=”2057″][/IT_EPOLL_VOTING]