মঙ্গলবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশ’- শীর্ষক আলোচনা সভায় মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু তাকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তার মুক্তি বা চিকিৎসা করাতে হলে প্রয়োজনে আমাদেরকে লড়াই করতে হবে। উন্নত চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর সব দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, এই সরকার অবৈধ ও অসাংবিধানিক সরকার। একটা সংসদের মেয়াদ থাকা অবস্থায় আরেকটি সংসদের নির্বাচন করা অবৈধ। সরকার সারা বিশ্ব থেকে দেশ ও জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি বা চিকিৎসা করাতে হলে প্রয়োজনে লড়াই করতে হবে। কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-যুবক সবাইকে এই সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সাড়ে ৪ লক্ষ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়ে কোনো কথা বলা হচ্ছে না। খাদ্য সংকট, পুষ্টি সংকটে জনগণকে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে লুটপাট বাংলাদেশকে দেউলিয়া করে দিচ্ছে। অথচ এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ক্রমাগত উন্নয়নের বুলি আওড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে গণদাবি মেনে দ্রুত পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় এই সরকারকে ন্যাক্কারজনকভাবে বিদায় নিতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা ব্যাংকিং খাতকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অর্থ পাচার করে এই দেশকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রকে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এই সরকার। তিনি বলেন, আগামীতে দেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে এবং নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, এই সরকার আরেকটি অবৈধ নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। কিন্তু জনগণ আর এদেশে কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সুচিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর সব দায়দায়িত্ব এই সরকারকেই নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, রিজার্ভে ধস নেমেছে, রপ্তানি কমেছে, অর্থনীতির সূচক নিম্নমুখী। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ তারা এখন অসংলগ্নমূলক কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, বিনা অনুমতিতে সভা-সমাবেশ করতে না দেওয়ার ঘোষণা সরকারের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ। মান্না বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রমাণ করে- উনি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের পরিচালনায় এতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বায়ক ইমরান ইমনসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বক্তব্য রাখেন।