ঢাকার রূপনগরের সবজি বিক্রেতা আয়নাল হোসেনের (৫৫) স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৪৫) ঢাকায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর লাশ নিয়ে আয়নাল হোসেন ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় বাড়িতে ফিরছিলেন। তবে পথে বাসের চাপায় আয়নালও বাড়ি ফিরেছেন লাশ হয়ে। একই দুর্ঘটনায় ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালকও নিহত হন। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ঘোগা সেতুর পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত অ্যাম্বুলেন্সচালকের নাম দ্বীন ইসলাম (৪৫)। তাঁর বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী থানায়। দুর্ঘটনার পর গতকাল রাত ৯টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ দুর্ঘটনায় নিহত আয়নাল হোসেনের তিন ছেলে গুরুতর আহত হন। আহত ব্যক্তিরা হলেন শহীদ হোসেন (২০), ফরহাদ হোসেন (১৮) ও ফিরোজ হোসেন (২৯)।
আয়নাল হোসেনের মেয়ে রোজিনা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবা ঢাকার মিরপুরের রূপনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে সবজি বিক্রি করতেন। তাঁর মা ফিরোজা বেগম গতকাল সকালে মারা যান। মায়ের লাশ নিয়ে তাঁর বাবা ও তিন ভাই ঢাকা থেকে গাইবান্ধা সদরের গিদারি এলাকায় যাচ্ছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ঘোগা সেতু এলাকায় পৌঁছালে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে আয়নাল হোসেনের মৃত্যু হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন অ্যাম্বুলেন্সচালক দ্বীন ইসলাম ও আয়নাল হোসেনের তিন ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সচালক দ্বীন ইসলাম মারা যান।
শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রোজিবুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে লাশ পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানা যায়, উভয় গাড়ি বেপরোয়াভাবে চালানোর কারণেই মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। দুর্ঘটনার পর শ্যামলী পরিবহনের বাসের চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক এ কে এম বানিউল আনাম বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত উভয় গাড়ি পুলিশি হেফাজতে। গতকাল রাতেই নিহত আয়নালের মেয়ে রোজিনা বাদী হয়ে মামলা করেন। এই দুর্ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।