সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অপর চার সদস্য।
কোনো ব্যক্তি, প্রার্থী বা দল যদি ভোটের মাঠে অন্যায়ভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে বা ভোটে অনিয়ম করে তবে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাসহ প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা আইনে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দেওয়া আছে। এমনকি কোনো কর্মকর্তা যদি ভোটে অনিয়মে সহযোগিতা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারে ইসি। কিন্তু গত দুটি জাতীয় সংসদ এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে অনিয়মের নানা ঘটনা দেখা গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কমিশন তার ক্ষমতা প্রয়োগে নীরব থেকেছে।
ইসির এমন ভূমিকায় মানুষের ভোটাধিকার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ভোটের প্রতিও আগ্রহ কমছে মানুষের। নির্বাচন বিশ্লেষকেরা বলছেন, কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের আস্থার সংকট কাটিয়ে ভোটাধিকার রক্ষা করা।
এমন পরিস্থিতিতে আজ ২ মার্চ দেশে চতুর্থবারের মতো পালিত হতে যাচ্ছে ‘জাতীয় ভোটার দিবস’। এবারের প্রতিপাদ্য ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, রক্ষা করব ভোটাধিকার’।
নির্বাচন কমিশন ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে না পারলেও ভোটাধিকার হরণ প্রতিহত করতে পারে।
বদিউল আলম মজুমদার সম্পাদক, সুজন
নির্বাচন বিশ্লেষকেরা বলছেন, আস্থার যে সংকট তৈরি হয়েছে, নতুন ইসিকে তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তা কাটিয়ে উঠতে হবে। সংবিধানে ইসিকে স্বাধীন সত্তা ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে তারা জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করতে পারে, জনগণ নিজের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিতে পারে। আর এটি নিশ্চিত করা ইসির সাংবিধানিক দায়িত্ব। তবে রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই অধিকার রক্ষায় সরকারের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক ভোটারের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন এবং ২০১৮ সালে রাতের ভোট ও নানা কারসাজির কারণে অনেক ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সাংবিধানিকভাবে ভোটাধিকার রক্ষা করা ইসির দায়িত্ব। কিন্তু এখানে নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। সরকারে সহায়তা না থাকলে ইসির পক্ষে ভোটাধিকার রক্ষা করা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে ইসির হাতে ভোট বাতিল বা বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা আছে। তারা ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে না পারলেও ভোটাধিকার হরণ প্রতিহত করতে পারে।
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেও প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসে গত সোমবার বলেছেন, সংবিধান ও আইন অনুসরণ করে তাঁরা চেষ্টা করবেন, যাতে সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, এটাই তাঁদের বড় চ্যালেঞ্জ।
– প্রথম আলো