রাজশাহীতে পালিয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর প্রেমিকের নামে অপহরণ মামলা করায় থানার ভেতরেই বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে এক কিশোরী।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজশাহীর তানোর থানার বাথরুমে মহিলা পুলিশ পাহারা থাকা অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে।
তানোর পৌর এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ও সনাতন ধর্মের অনুসারী।
স্থানীয়রা জানান, তানোর উপজেলার বনকেশর গ্রামের আলামিন (২৫) নামের এক যুবকের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আলামিন বিবাহিত ও এক সন্তানের বাবা। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে আলামিন ও ওই কিশোরী পালিয়ে যান। এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবার থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে আলামিন ও কিশোরীকে আটক করে রোববার তানোর থানায় নিয়ে আসে। কিশোরীর বাবা-মাও থানায় আসেন। পরে আলামিনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলার প্রস্তুতি নেন তারা। কিন্তু কিশোরী আলামিনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না বলে বাবা-মাকে সাফ জানিয়ে দেয় এবং তাকেই বিয়ের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। এনিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই কিশোরীর রাগারাগি হয়। একপর্যায়ে কৌশলে থানার বাথরুমে গিয়ে বিষপান করে সে।
এ বিষয়ে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন রিসিভ করেন এসআই আল ইমরান। ওসি সাক্ষ্য দিতে বাইরে গেছেন জানিয়ে ইমরান বলেন, ঢাকা থেকে ধরে আনার পর থানায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ছিল কিশোরী। এসময় সে বাথরুমে যেতে চাইলে মহিলা পুলিশ তাকে নিয়ে যায়। এসময় তার গায়ের চাদরও জমা নেওয়া হয়। সে বাথরুমে ঢুকলে দরজার ছিটকানিও লাগাতে দেওয়া হয়নি। মহিলা পুলিশ পাহারায় দাঁড়িয়েও ছিল। কিন্তু সে বাথরুমে গিয়েই বিষপান করে।
এসআই ইমরান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, তার কাছে আগে থেকেই বিষ ছিল। তবে বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশ তাকে দ্রুত তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিশোরীর পরিবারের করা অপহরণের মামলায় আলামিনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রফিকুল আলম বলেন, ‘ওই কিশোরী বিষপান করেছে। তবে পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় নয়, তার বাবা-মায়ের কাছে থাকার সময়। তারপরও আমরা বিষপানের ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত করা হবে’।