ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে সিলেটে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে সীমান্ত উপজেলা কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জের লক্ষাধিক মানুষ পানিবিন্দি হয়ে পড়েছেন। সদর উপজেলার কিছু নিচু এলাকাও ডুবে গেছে। এছাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে গোয়াইনঘাট উপজেলার সড়ক।
এদিকে, সিলেট নগরের নিম্নাঞ্চলেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ছে সুরমা ও কুশিয়ারাসহ অন্য নদ-নদীর পানিও। কোনো কোনো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টির পানির সঙ্গে যোগ হচ্ছে উজান থেকে নেমে আসা ঢল। ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম (বরাক অববাহিকা) প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। সুরমা, কুশিয়ারা, ভোগাই-কংস, ধনু-বাউলাই, মনু ও খোয়াই নদীর পানি বেশ কিছুটা বেড়েছে। কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, পিয়াইনসহ সব নদীর পানি বাড়ছে। অব্যাহত বৃষ্টি আর উজানের ঢলে কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। এসব গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। এখানকার ফসলি জমিও তলিয়ে গেছে। একই অবস্থা গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট উপজেলারও।
সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, সিলেটে ১৮ মে অবধি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলা বৃষ্টি বেশি হবে।
সিলেট পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা জাগো নিউজকে বলেন, উজানের ঢলে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। এর সঙ্গে সিলেটে বৃষ্টিও যোগ হয়েছে। নদীর পানি বাড়ার কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে শনিবার (১৪ মে) সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান নগরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পানির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে সরকার রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় জেলার ৫ উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে ৭৯ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।