ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে চাহিদা বেড়েছে ডিমের। সেই তুলনায় জোগান বাড়েনি। এ কারণে বাজারে দাম বাড়তি। তবে শিগগিরই আমদানি না হলে দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
আমদানির অনুমতি দিয়েও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না ডিমের বাজার। পুরোনো অজুহাতে আমিষজাতীয় পণ্যটির দাম এক দিনের ব্যবধানে আরও এক দফা বেড়েছে। বড় বাজারগুলোয় খুচরা বিক্রেতারা প্রতি ডজন ফার্মের ডিমের দাম রাখছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। তবে পাড়া-মহল্লায় কিনতে গেলে গুনতে হচ্ছে ১৭০ টাকা।
এদিকে আমদানির অনুমতি পাওয়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৩৩ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করে প্রতিটি ডিমের আমদানি খরচ ১০ টাকার বেশি পড়বে। শুল্ক কমালে ব্যবসায়ীরা দ্রুত আমদানি করবে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো প্রতিটি ফার্মের ডিমের খুচরা দর ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সেই হিসাবে ডজনের দাম দাঁড়ায় ১৪৪ টাকা। দর বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি ডিম আমদানির অনুমতিও দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর আরও দু’দফা ১০ কোটি আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। তিন দফায় মোট ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত আমদানি করা কোনো ডিম দেশে আসেনি। অন্যদিকে দর বেঁধে দেওয়ার প্রায় এক মাস পরও বাজারে তা কার্যকর হয়নি।
রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোয় গত মঙ্গলবার ডিমের ডজন বিক্রি হয়েছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। তবে এক দিনের ব্যবধানে দাম আরেক দফা বেড়েছে। মাস দু’য়েক আগে ডিমের দাম যে রেকর্ড গড়েছিল সেই অবস্থানে আবারও পৌঁছে গেছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর তেজকুনিপাড়া, হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ এলাকাভিত্তিক কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। তবে এক হালি কিনতে হলে ব্যবসায়ীরা দাম রাখছেন ৬০ টাকা। প্রতিটি ডিমের দাম পড়ছে ১৫ টাকা। তবে কারওয়ান বাজারের মতো বড় বাজারগুলোয় কিছুটা কম দরে পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল কারওয়ান বাজারে ডিমের ডজন বিক্রি হয় ১৫৫ থেকে ১৫৮ টাকায়।
তেজকুনিপাড়া এলাকার মা-বাবার দোয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী ওহিদুল ইসলাম বলেন, পাইকারি বাজারে চার-পাঁচ দিন ধরে ডিমের দাম বাড়তি। ডজন ১৭০ টাকার কমে বিক্রি করলে লাভ থাকে না।
তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, আমদানির কথা বলা হলেও এখনও কোনো ডিম আসেনি বাজারে। তাছাড়া কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ডিমের চাহিদা বেড়েছে।
প্রথম দফায় ডিম আমদানির অনুমতি পেয়েও এখন পর্যন্ত আমদানি করতে পারেনি মীম এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী পিয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, ডিম আমদানিতে ৩৩ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। এতে প্রতিটি ডিমের আমদানি খরচ ১০ টাকার বেশি পড়ে। আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সরকারের কাছে ডিমের আমদানি ব্যয় তুলে ধরে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেকেই এলসি খুলেছে। আগামী সপ্তাহে কিছু ডিম আসবে। বাজার পরিস্থিতি বুঝে তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ আমদানি করতে হবে এ গ্রেডের ডিম। ভারতে এ মানের ডিমের দাম কিছুটা বেশি। এসব ডিম এনে সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি করলে লোকসান হবে।